ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ:
২৮
মার্চ
২০২৩ ,
মঙ্গলবার
০৭ : ০৩ পিএম প্রদর্শিত হয়েছে ৭৮৪৩ বার
|
বাংলাদেশ ব্যাংক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি। মাহমুদুল হোসাইন বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সরবরাহ করবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মের পরিদফতর (আরজেএসসি) কাছে কোম্পানি নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তালিকা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না। এছাড়া কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপি হিসেবে পরিগণিত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করতে পারবে। সচিব বলেন, নোটিশ প্রদানের ২ মাসের মধ্যে ঋণখেলাপি গ্রহীতা তার কাছে পাওয়া টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করা যাবে। এছাড়া কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপির তালিকা না পাঠালে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ লাখ ও সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে। এরপরও লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে প্রতিদিনের জন্য এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হবে।
মাহমুদুল হোসাইন আরও জানান, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ভিত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এটাকে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার জন্য সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়। প্রস্তাবিত আইনে মোট ৩৪টি ধারা রয়েছে। এসময় সংশোধনীতে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কারা, এ বিষয়ে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সংশোধনীতে উল্লেখ রয়েছে। সামর্থ্য থাকার পরও যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ঋণ, অগ্রীম বা বিনিয়োগ বা আর্থিক সুবিধার অংশ বা তার ওপর আরোপিত সুদ পরিশোধ না করে তাহলে তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে।
সচিব বলেন, এছাড়া কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জালিয়াতি বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের নামে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করলে, সেটাকেও ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির আওতায় আনা হয়েছে। একইসঙ্গে যে উদ্দেশ্যে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ অগ্রিম নেয়া হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ব্যবহার না করলেও ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়া ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন, ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঋণ প্রদান ও জামানত গ্রহণ এ বিষয়টি ব্যাংক কোম্পানি আইনে নতুন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান মাহমুদুল হোসাইন। তিনি বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বা তার আত্মীয় যেই হোক না কেন তাকে অবশ্যই জামানত বা বন্ড বা সিকিউরিটি দিয়ে ঋণ নিতে হবে। তিনি জানান, ব্যাংক কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্যকে জামনতি ঋণ বা অগ্রিম ব্যতিত অন্যকোনো ঋণ বা অগ্রিম মঞ্জুর করবে না। পরিচালক বা পরিচালকের সদস্যদের দায় গ্রহণের ভিত্তিতে জামনতি ঋণ, অগ্রিম ঋণ, বা অন্যকোন আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না। এখন এটা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, সে যেই হোক না কেন প্রত্যেকের ক্ষেত্রে কো-লেটারেল থাকতে হবে। যেমন, জামানত, বন্ধক থাকতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সকলের ক্ষেত্রে।
মাহমুদুল হোসাইন আরও বলেন, ব্যাংক কোম্পানির অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠাতা বা ফাউন্ডেশন যেন বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত ইন্সপেকশন করতে পারে সেই ধারা এখানে সংযোজন করা হয়েছে।
এছাড়া ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২৩ অনুযায়ী কোনো পরিবার থেকে ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডে সর্বোচ্চ ৩ জনের বেশি থাকতে পারবেন না বলেও জানান সচিব। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর
প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক
জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত
ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com