বীরঙ্গনা মুক্তিযুদ্ধার টাকা আত্মসাত: আসামি গোলাম কাদির কারাগারে
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ:
০৪
এপ্রিল
২০২৩ ,
মঙ্গলবার
০৪ : ০৪ পিএম প্রদর্শিত হয়েছে ৮০৫৭ বার
|
বীরঙ্গনা মহিলা মুক্তিযোদ্ধা জাহেরা খাতুনের সঙ্গে প্রতারনা করে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় এ,বি,এম গোলাম কাদির (জি,কে বাবুল) এর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেন জামিনের আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. মোমেন বিল্লাহ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদীনি একজন বীরাঙ্গনা মহিলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান। বাদীনির মা একজন বীরাঙ্গনা যাহার বীরাঙ্গনা গেজেট নাম্বার ৪০৮ এবং মুক্তিযোদ্ধা নাম্বার ০১৮০০০৫৮৬২। বাদীনির মাতা একজন দুস্থ্য মহিলা। বাদীনি এবং তাহার মাতার সহিত আসামির পরিচয়ের সূত্র ধরিয়া আসামি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় এবং জাতীয় সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন এর মহাসচিব হিসেবে আসামি বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত উত্তর আবাসিক প্রকল্পে ফ্লাট পায়ে দেয়ার ক্ষমতা আছে মর্মে দাবি করেন। আসামির কথা বিশ্বাস স্থাপন করিয়া ফ্লাট পাওয়ার বিষয়ে বাদীনির মাতা সহ বাদিনীর পরিবারের সকলকে উদ্বুদ্ধ করিয়া আসামি বাদীনির নিকট উক্ত ফ্ল্যাট বরাদ্ধ পেতে ৫ লক্ষ টাকা লাগবে বলিয়া জানায় এবং আসামি বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার একটি কাটিং বাদিনী এবং তার মাতাকে দেখিয়ে বলেন যে, গৃহঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আমার অভাধ ক্ষমতা রয়েছে। বাদীনি এবং তাহার পরিবার এতে আশান্বিত হয়। আরও জানা যায়, বাদীনি এবং তাহার মাতা আসামীর কথামতো ৫ লক্ষ টাকা জোগাড় করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঋণ ৮ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন এবং উক্ত ৮ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা ওই দিনই বিকেলে নরসিংদী থেকে ট্রেনে রওনা দিয়ে বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে গত বছরের ১০ মার্চ আসামির অফিসে এসে রাত অনুমান ৮ ঘটিকায় দিকে বাদীনি এবং তাহার মাতা ও বাদিনের মেয়ে জামাই এবং সাক্ষী কাজী আব্দুল মুকিম সন্টু বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিতিতে আসামিকে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। আসামি উক্ত টাকা পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা স্বনির্ভর পরিকল্পনা সংক্রান্ত ফরম নিজ হাতে পূরণ করেন যাহা বাদীনি স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে আসামি তাহার কথামতো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাট বরাদ্ধ পেয়ে যাবেন মর্মে জানান। এরই প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও আসামীর কথামতো কোনরকম ফ্ল্যাট বরাদ্ধ না পাওয়ায় বাদীনি এবং তাহার মাতা আসামির সহিত যোগাযোগ করিলে আসামি আরো কিছুদিন সময় লাগবে বলে কালক্ষেপন করিতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ১০/১১ মাস অতিবাহিত হলেও বাদীনির মায়ের নামে কোন ফ্লাট বরাদ্ধ না হওয়া আসামিরর সহিত যোগাযোগ করিয়া ফ্ল্যাট বরাদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামি কোনরুপ সদুত্তর দেয় না বরং বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা করিতে থাকে। এদিকে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের কারণে প্রতি মাসে বাদীনির মাতার প্রাপ্ত ভাতার প্রায় অর্ধেকের বেশি টাকা কর্তন করা হয় যাহাতে অবশিষ্ট সামান্য টাকা দিয়ে বাদীনির মাতার চিকিৎসা সহ সমগ্র পরিবারের ভরণপোষণ নির্বাহে অবর্ণনীয় কষ্টে পতিত হতে হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে বাদীনি জানতে পারেন যে, আসামি জাতীয় সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব থেকে তাহার মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেবামূলক কাজ করেন মর্মে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে আসামি উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে তাহার অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন বীর মুক্তিযোদ্ধা/বীরঙ্গনাদেরকে প্রলুদ্ধ করিয়া বিভিন্ন কৌশলে সরকারি জমি/ফ্ল্যাট বরাদ্ধ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাহাদের থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন। সর্বশেষ বাদীনি এবং তার মা আসামী নিকট তাদের দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে আসামি বাদীনিকে বলেন যে, উক্ত ফ্লাট বরাদ্ধ পেতে হলে বর্তমানে আসামিকে আরো ১ লক্ষ টাকা দেওয়া লাগবে না হলে ফ্ল্যাট বরাদ্ধ পাওয়া যাবে না। তখন বাদীনি এবং তার মা আর টাকা দিতে পারবেনা বলে জানিয়ে দেয় এবং আসামির নিকট তাদের পাওনা ৫ লক্ষ টাকা ফেরত চায়। তখন আসামি টাকা ফেরত দিবেনা বলে জানিয়ে দেয় এবং আসামি আরো বলে যে, তোর মায়ের দেয়া টাকা কখনোই পাবি না। আর টাকা ফেরত না দিলে তুই আমার কিছুই করতে পারবি না। পারলে কিছু করিস এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর গুষ্টি শুদ্ধ শেষ করে দেব মর্মে হুমকি দেয়। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর
প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক
জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত
ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com