শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
● পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল উদ্বোধন      ● সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে      ● বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে হাতিরঝিল থেকে পানি নিচ্ছে হেলিকপ্টার      ● বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের খোঁজখবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী      ● বঙ্গবাজারে ফায়ার সার্ভিসের ৫০ ইউনিট, ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন      ● ৫ ঘণ্টায়ও নেভেনি বঙ্গবাজারের আগুন      ● ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে হামলা, টিয়ারশেল নিক্ষেপ      ● আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সাথে নৌ-সেনা ও বিমানবাহিনী      ● বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড: আশপাশের ৪ ভবনে ছড়িয়েছে আগুন      ● জ্বলছে বঙ্গবাজার : প্রতিনিয়ত বাড়ছে আগুনের তীব্রতা     
ছুটছে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২ , শনিবার ০১ : ০৪ পিএম   প্রদর্শিত হয়েছে ৫৭৪ বার

ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। শনিবার (৩০ এপ্রিল) ভোর থেকেই যাত্রীদের চাপ বাড়ায় মহাসড়ক দুটিতে যানবাহনের চাপও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।


সরেজমিনে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গী স্টেশন রোড, বোর্ড বাজার, কোনাবাড়ী, শ্রীপুর, মাওনা, কালিয়াকৈরের মৌচাক, সফিপুর ও চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। রাতে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাসা, ট্রাক, পিকআপ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছে।


এদিকে টঙ্গী রেল স্টেশনে এবং জয়দেবপুর জংশনে সকাল থেকেই বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। অগ্রিম টিকেট নেওয়া ব্যক্তিরা ঢাকার কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে গন্তব্যে পৌঁছাবেন।


গাজীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিআরটিএ প্রকল্পের কাজের কারণে যানজটের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সে আশঙ্কা দূর করে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলছে। ফলে স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মানুষ।


গাজীপুরের সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফিরোজ হোসেন জানান, শিল্পকারখানা ছুটি হলে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। যাত্রী বাড়লেও সড়কে চিরচেনা যানজট নেই।


আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গত কয়েক দিন ধরে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী। ঈদ যাত্রার চতুর্থ দিনে শনিবার (৩০ এপ্রিল) ধূমকেতু এক্সপ্রেস ৪০ মিনিট এবং নীলসাগর এক্সপ্রেস ৪৫ মিনিট দেরিতে ছেড়ে যায়। তবে বাকি ট্রেনগুলো কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সঠিক সময়েই ছেড়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই হাজারো ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো স্টেশন। এর আগে বুধবার থেকে এবারের ঈদযাত্রা শুরু করে রেলওয়ে। তবে প্রথম দুইদিন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক হলেও শুক্রবার থেকে তা বেড়েছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এদিন ভোর থেকেই সবগুলো প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের ভিড়। একেতে গরম, এরপর আবার অধিক লোকসমাগমের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীদের। গরমে শিশুদের কিছুটা প্রশান্তি দিতে অনেক অভিভাবককে হাত পাখা দিয়ে তার সন্তানদের বাতাস করতে দেখা যায়।


যাত্রীরা ভোগান্তি এড়াতে ট্রেন ছাড়ার এক থেকে দুই ঘণ্টা আগেই স্টেশনে পৌঁছান। ভোরের ট্রেন ধরতে অনেকেই আবার সেহরির পর পরই স্টেশনে চলে এসেছেন। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিনা টিকিটে কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না, মেইন গেটে টিকিট প্রদর্শন করেই প্রবেশের অনুমিত মিলছে। যারা টিকিট পাননি, তারাও নিতে পারছেন স্ট্যান্ডিং টিকিট। ঈদযাত্রার প্রথম দুইদিন বুধ ও বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক ভিড় থাকলেও শুক্রবার সকাল থেকেই বেড়েছে যাত্রীর চাপ। কমলাপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তিল ধারনের জায়গা ছিল না শুক্রবার, আজও একই অবস্থা। এদিকে, ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে। এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়।


অন্যদিকে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে আজও ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের চাপ রয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় মধ্যরাত থেকে আটকা পড়েছে তিন শতাধিক যাত্রীবাহী যানবাহন (দূরপাল্লার বাস ও ছোট গাড়ি)। রাতভর এসব গাড়ির যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৮টার পর থেকে লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। যারা কাটা লাইনের গাড়িতে ঘাটে পৌঁছেছেন, তারা সহজেই ফেরি ও লঞ্চে পারাপার হতে পারছেন। তবে দূরপাল্লার বাস ও প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসের যাত্রীদের ফেরি পার হতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে ফেরিতে উঠছে। কোনো ধরনের জটলা নেই।


বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ডিজিএম মো. খালিদ নেওয়াজ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পাটুরিয়া ঘাট হয়ে সাড়ে আটশ বাস, চার হাজার ২৬টি ছোট গাড়ি, তিন হাজার ২০টি মোটরসাইকেল এবং ৪০২টি ট্রাক পার হয়েছে। এসময়ে দুই ঘাট মিলিয়ে সর্বমোট সাড়ে ১২ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে।


ঢাকা-আমতলী-ঢাকা রুটে চলাচল করা শতাব্দি বাঁধন ও ইয়াদ-১ লঞ্চের যাত্রীরা রাত থেকে অপেক্ষা করছেন। তবে দুপুর ১২টায়ও ঘাট ছেড়ে যায়নি লঞ্চ দুটি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। একপর্যায়ে তারা লঞ্চে বিক্ষোভও করেন। যাত্রী সামসুল বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) রাত ১০টা থেকে বসে আছি। লঞ্চটি ওভারলোড (অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই) হওয়ার পরও ছাড়ছে না। আমরা সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ করেছি। তারা বলেছে দ্রুত লঞ্চ ছাড়বে।’ জুবায়ের হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘রাতে যে খাবার নিয়ে এসেছি, তা তো শেষ। এখন লঞ্চ ছাড়লেও কখন পৌঁছাবো ঠিক নেই। কীভাবে পুরো পরিবার নিয়ে সারাদিন যাত্রা করবো, সেটাই বুঝতে পারছি না।’


এ বিষয়ে জানতে চাইলে লঞ্চ দুটির সংশ্লিষ্ট কেউ কথা বলতে চাননি। সদর ঘাটে দায়িত্বে থাকা বিআইডাব্লিউটিএ-এর কর্মকর্তারা জানান, শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ঘাটে লঞ্চ ভিড়েছে ৫৯টি। এরমধ্যে ছেড়ে গেছে ৪৫টি লঞ্চ। কিছুক্ষণ পর পরই লঞ্চ মালিকদের বাড়তি যাত্রী না নিতে এবং সময়মতো ছেড়ে যেতে সতর্ক করা হচ্ছে।


জানতে চাইলে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আলমগীর বলেন, ‘বারবার মাইকিং করা হচ্ছে। যাতে যথাসময়ে লঞ্চ ছেড়ে যায়। মন্ত্রণালয়ের টিমও এখানে কাজ করছে।’


প্রসঙ্গত, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাজিরকান্দি নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বিআইডব্লিউটি'র পক্ষ থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাজিরকান্দি নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই কারণে ঘরমুখো মানুষ বিকল্প পথ ব্যবহার করার কারণে সব রুটেই কম বেশি চাপ রয়েছে। তাছাড়া ধাপে ধাপে গার্মেন্টস ছুটি হবার কারণে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গী স্টেশন রোড, বোর্ড বাজার, কোনাবাড়ী, শ্রীপুর, মাওনা, কালিয়াকৈরের মৌচাক, সফিপুর ও চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। রাতে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাসা, ট্রাক, পিকআপ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছে।

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »





  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর

প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক

জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত

ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com

© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com