রংপুর ও সিলেট বিভাগ থেকে বিদায় নিচ্ছে বন্যা
উত্তরের পানি নেমে প্লাবিত মধ্যাঞ্চল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ:
২৩
জুন
২০২২ ,
বৃহস্পতিবার
০৭ : ০৬ পিএম প্রদর্শিত হয়েছে ৫৫৬ বার
|
বৃষ্টি কমায় নামছে বন্যার পানি মধ্যাঞ্চল ছাড়া সারা দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। বৃষ্টি কামায় ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল থেমে যাওয়ায় সিলেট ও রংপুর অঞ্চলের সব জেলা থেকে দ্রুত নামছে বন্যার পানি। এসব এলাকার সবগুলো নদীর পানি কমছে। তবে দেশের মধ্যাঞ্চলে পদ্মা নদীর পানি কিছুটা বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্ট হয়েছে। যদিও আগামী শনিবার নাগাদ এসব এলাকার পানিও কমতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানায়। এদিন এক বুলেটিনে কেন্দ্র জানায়, বুধবার দুপুর ২টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ৩৫টি পয়েন্টে পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৫৫টি পয়েন্টে কমেছে। ১৮ পয়েন্টে পানির স্তর স্থিতিশীল রয়েছে। এতে বলা হয় ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া, হাতিয়া, চিলমারী ও ফুলছড়ি, যমুনার বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ ও পোড়াবাড়ি, কুড়িগ্রামের ধরলা, গাইবান্ধার ঘাগোট, সুরমার কানাইঘাট, সিলেট ও সুনামগঞ্জ, কুশিয়ারার অমলশিদ, সচলা, খোয়াইয়ের বল্লা, পুরাতন সুরমার দিরাই এবং সোমেশ্বরীর কলমাকান্দার পানি বিপদ সীমার কিছুটা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বুধবারের তুলনায় তা আরো কমেছে। বন্যা কবলিত সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও শেরপুরের প্লাবিত এলাকা থেকে পানি আরো কমেছে। পানি কিছুটা বাড়ছে টাঙ্গাইল, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর ও কুমিল্লায়। যদিও এই পানি বাড়ার হার গত ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা কমেছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, রংপুর, কড়িগ্রাম লালমনিরহাট জেলায় আক্ষরিক অর্থে বন্যা নেই। তবে এসব জেলার নিচু এলাকায় আটকে পড়া পানি নামছে ধীর গতিতে। তাই এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায় সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃহস্পতিবার আরো কমেছে। বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে আরো করেছে। একই সময়ে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কমেছে ৭ সেন্টিমিটার। সারি ও লোভাছড়া নদীর পানিও কমেছে। এছাড়া গোয়াইনঘাট, কোম্পানিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, সদর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জের প্লাবিত এলাকা থেকে পানি সরে গেছে। বৃষ্টি না হলে শনিবার নাগাদ বন্যা মুক্ত হবে এসব এলাকা। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার তিস্তা নদীর পানি গঙ্গাচড়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যমুনার পানিও বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। রংপুর অঞ্চলসহ তিস্তা, ধরলা ও যমুনা অববাহিকায় বন্যার পানি অনেকটাই নেমে গেছে। মাদারীপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর ও কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার জানায়, এদিন বৃষ্টির প্রবণতা অনেকটাই কমে গেছে। আগামীকাল শনিবার নাগাদ বৃষ্টি আরও কমে যেতে পারে। এদিন অধিদপ্তর জানায় বুধবার (২২ জুন) বন্যাকবলিত সিলেট ও রংপুরে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। কম বৃষ্টি হয়েছে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামে ও ময়মনসিংহ বিভাগেও। বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মাদারীপুরে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন- মৌসুমী বায়ুর অক্ষ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তরপূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামোটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার (২৪ জুন) সন্ধা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়য় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। এসময় রাজধানী ঢাকায় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১০-১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকা আকারে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে বাড়তে পারে। আগামী শনিবার নাগাদ বৃষ্টিপাত প্রবণতা হ্রাস পাবে। অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, নোয়াখালি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর
প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক
জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত
ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com