রাস্তাটির শেষ কোথায়, কৌতূহলের শেষ নেই!
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ:
০৩
জুলাই
২০২২ ,
রবিবার
০২ : ০৭ পিএম প্রদর্শিত হয়েছে ৫৪৬ বার
|
পৃথিবীর শেষ সীমানা নিয়ে বিশ্ববাসীর মনে কৌতূহলের শেষ নেই। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে কত কিছুই তো অজানা! যেমন এ যে পৃথিবী শুরুই বা কোথায় আর শেষই বা কোথায়। এ রকম নানা বিষয় এখনও অনেকের অজানা। পৃথিবীতে রাস্তার শেষ কোথায়? কোন জায়গা থেকে রাস্তা নেই? উত্তরে জানা যায়, ইউরোপের ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ হলো পৃথিবীর শেষ রাস্তা। যেটি নরওয়েতে অবস্থিত। পৃথিবীর শেষ সীমানা নিয়ে বিশ্ববাসীর মনে কৌতুহলের শেষ নেই। বিশেষ করে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা সে স্থানে দেখতে চান সরেজমিনে। উত্তর মেরুর মেরু আলো দেখতে যেমন আশ্চর্যজনক, তেমনি দুঃসাহসীরা অন্তত একবার পৃথিবীর শেষ রাস্তাটি হাঁটার স্বপ্ন দেখে। পৃথিবীর শেষ রাস্তাটি নিরক্ষরেখার শীর্ষে উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। উত্তর মেরুর কাছাকাছি থাকার কারণে শীতকালে রাত শেষ হয় না এবং গ্রীষ্মে সূর্য অস্ত যায় না। কখনও কখনও এখানে প্রায় ছয় মাস সূর্যের আলো পড়ে না। শীতকালে, এখানে তাপমাত্রা মাইনাস ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে মাইনাস ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে, যেখানে গ্রীষ্মে গড় তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে।
বলা হয়ে থাকে, এর পর নাকি আর কোনো রাস্তাই নেই। দীর্ঘ এক পথ। আলো-অন্ধকারে মোড়া। বরফে ঢাকা। দীর্ঘ নিঃসঙ্গ ভয়বিহ্বল এক পথ। রাস্তাটিকে মুখে বলা হয়ে থাকে ‘দ্য লাস্ট রোড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ তবে এর আসল নাম E 69 Highway। নরওয়ের উত্তরমেরুর সঙ্গে এই রাস্তাটি যুক্ত রয়েছে। ইউরোপের ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ উত্তর মেরুর কাছাকাছি। এই পথটি নরওয়ের ওল্ডারফিউয়ার্ড গ্রামের সাথে উত্তর ইউরোপের নর্ডক্যাপকে সংযুক্ত করেছে। সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৯ কিলোমিটার। আপনি যদি ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ হাইওয়ে’তে যেতে চান, আপনাকে ৫ টি টানেল অতিক্রম করতে হবে। উত্তর কেপের দীর্ঘতম টানেলটি ৭.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২১২ মিটার নিচে পৌঁছেছে। এই ১২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ হাইওয়ে অনেক মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্য দিয়ে গেছে। ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ এই দৈর্ঘ্য জুড়ে ৫ টি টানেলের মধ্য দিয়ে যায় যার মধ্যে দীর্ঘতমটির দৈর্ঘ্য ৬.৯ কিমি। তবে ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ হাইওয়ে’ যাওয়ার কিছু নিয়ম আছে। আপনি যদি তাদের অনুসরণ না করেন তবে সেই রাস্তায় যেতে ভুলবেন না। ”ই-৬৯ হাইওয়ে” এর অনন্য ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে একা দেখার অনুমতি নেই। এখানে যেমন প্রচন্ড বেগে বাতাস বইছে তেমনই ঠান্ডা। সেখানকার আবহাওয়া একেবারেই অনিশ্চিত। গ্রীষ্মকালেও এখানে তুষারপাত হয়। আবার উপকূলে থাকায় যে কোনো মুহূর্তে আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে। আর শীতকালে এই রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ভারী তুষারপাত বা বৃষ্টির ক্ষেত্রে আবার গাড়ি চালানো অত্যন্ত বিপজ্জনক। মাঝে মাঝে ঝড় হতে পারে। এই অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার কারণে, ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ তে একা যাওয়া নিষিদ্ধ। শুধু তুষারই বরফ আর সমুদ্রই সমুদ্র। প্রকৃতপক্ষে, ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ একটি হাইওয়ে, যা প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই হাইওয়েতে অনেক জায়গা আছে, যেখানে একা হাঁটা বা গাড়ি চালানোও নিষিদ্ধ। অনেক মানুষ একসাথে আছে, তবেই আপনি এর মধ্য দিয়ে যেতে পারবেন নাহলে। এর পেছনের কারণ, সর্বত্র পড়ে থাকা বরফের মোটা চাদরের কারণে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। নরওয়ের’ই-৬৯ হাইওয়ে’ নির্মাণের পরিকল্পনা ১৯৩০ এর দশকে শুরু হয়েছিল। চার বছর পর, ১৯৩৪ সালে, রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এতে পর্যটন, মৎস্যসম্পদ ইত্যাদির পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’-এর বর্তমান দৈর্ঘ্য ১২৯ কিলোমিটার। যা ১৯৯২ সালে সম্পন্ন হয়। তারপর থেকে এটি চলছে। যদিও ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ বিশ্বের শেষ রাস্তা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, তবে বিশ্বে এরকম আরও রাস্তা রয়েছে। যদিও এই রাস্তাটি অস্তিত্বের অনন্য অবস্থানের কারণে অত্যন্ত রহস্যময়, এই ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’অনেক মনোরম ল্যান্ডস্কেপ, সমুদ্রের দৃশ্য এবং অবশ্যই এর দৈর্ঘ্য জুড়ে বরফের দৃশ্য দেখায়। এই হাইওয়েতে রাইড আপনার স্মৃতির বাক্সে সংরক্ষিত থাকবে জীবনে একবারের অভিজ্ঞতা হিসেবে। পুরো যাত্রা জুড়ে অনেকগুলি দৃষ্টিভঙ্গি সহ, এই রাস্তাটি প্রতিটি ড্রাইভিং উত্সাহীর জন্য অবশ্যই চেষ্টা করা উচিত। তবে রাস্তাটিকে বিশ্বের শেষ রাস্তা বলার কারণ যেমন রয়েছে, তেমনি সেখানে একা না যাওয়ারও কারণ রয়েছে। আবার জানা গেলেও সেই তথ্যটির যে কতখানি সত্যতা রয়েছে তা নিয়েও থেকে যায় ধোঁয়াশা। তেমনই পৃথিবীর শেষ রাস্তা বলেও একটি জায়গা রয়েছে। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর
প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক
জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত
ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com