গ্রামীণ টেলিকম থেকে চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের আইনজীবীর ১২ কোটি টাকা ‘ফি’ নেওয়ার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বুধবার (৬ জুলাই) ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বুধবার রিটটি করেন। এতে সংসদ সচিব, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বার কাউন্সিলের সচিব ওআইনজীবী মো. ইউসুফ আলীকে বিবাদী করা হয়েছে। 

বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (আজ) রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম। 

গত ৩০ জুন গ্রামীণ টেলিকম থেকে চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের পাওনা আদায়ের জন্য লড়তে যাওয়া আইনজীবী ইউসুফ আলীর ১২ কোটি টাকায় সমঝোতার বিষয়টি জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ। ওই সময় হাইকোর্ট বলেন, ‘আদালতকে ব্যবহার করে অনিয়ম যেন না হয়ে থাকে। যদি সবকিছু আইন অনুযায়ী না হয় তবে বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। আমি চাই না কোর্ট এবং আইনজীবীর সততা নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠে।’ এ সময় আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ কেন, উপমহাদেশের এমন কোনো আইনজীবী এখনো জন্ম নেয়নি যার ফিস ১২ কোটি টাকা হবে।’ এরপর আদালত ডক্টর ইউনূসের আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনি কত টাকা ফিস নিয়েছেন?’ তখন আইনজীবী বলেন, ‘আমি ২০ লাখ টাকা নিয়েছি।’ আদালত বলেন, ‘আপনি তো ২০ লাখ নিয়েছেন, কিন্তু চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের আইনজীবী কীভাবে ১২ কোটি টাকা নেন?’ এরপর আদালত শ্রমিকরা কে কত টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন তার তালিকা দাখিল করার নির্দেশ দেন। 

এর আগে গত ৩ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম থেকে চাকরিচ্যুত ১৫৭ কর্মচারীকে পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান আইনজীবী ইউসুফ আলী। এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের কিছু নথিও দেন। তা থেকে জানা যায়, চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের মধ্যে ২৬ জন পেয়েছেন ৪ কোটি ১০ লাখ ৮১ হাজার ৯১৭ টাকা করে। ৪৩ জন পেয়েছেন ৩ কোটি টাকার বেশি, ২৫ জন পেয়েছেন ২ কোটির টাকার বেশি, ১৯ জন পেয়েছেন এক কোটি টাকার বেশি ও এক কোটি টাকার নিচে পেয়েছেন ৪৪ জন চাকরিচ্যুত কর্মচারী। বাকি চারজন মারা যাওয়া ও চারজন দেশের বাইরে থাকায় টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এদিকে, মোয়াক্কেলদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সময়ের আলোর কাছে স্বীকারও করেন আইনজীবী ইউসুফ আলী। তবে ফিস হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তিনি কোনো আইন লঙ্ঘন করেননি বলে মন্তব্য করেন।