গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুতদের পক্ষে আইনজীবী ইউসুফ আলী ১২ কোটি নয়, ১৬ কোটি টাকা ফি নিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য ফি বাবদ তিনি নিযেছেন আরো ১০ কোটি টাকা। বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে ইউসুফ আলীর আইনজীবীরা হলফনামা আকারে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) এ তথ্য জানান। 

এর আগে আইনজীবী ইউসুফ আলী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুতদের পক্ষে আইনী লড়াই করতে ১২ কোটি টাকা ফি নিয়েছেন। 

মঙ্গলবার আদালতে ইউসুফ আলীর পক্ষে আইনজীবী আহসানুল করিম, রবিউল আলম বুদু, সাঈদ আহমেদ রাজা ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। 

শুনানিতে আইনজীবী আহসানুল করীম বলেন, ‘এই মামলায় আইনজীবী ইউসুফ আলী তার মোয়াক্কেলদের কাছ থেকে ১৬ কোটি টাকা ফি নিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য ফি বাবদ নিয়েছেন আরো ১০ কোটি টাকা।’ এসময় আদালত বলেন, ‘এটা সিম্পল ব্যাপার। আপনি বলুন যে আপনি এতো টাকা ফি নিয়েছেন। বাকিটা দুদক নাকি বাংলাদেশ ব্যাংক দেখবে সেটা তাদের ব্যাপার। অন্যান্য ফি ১০ কোটি টাকার বিষয়ে বিস্তারিত বলুন। এত লুকোচুরি করছেন কেন? সম্পূর্ণভাবে নির্দিষ্ট করে বলতে হবে সব।’ তখন আহসানুল করিম বলেন, ‘আমরা সম্পূরক হলফনামার মাধ্যমে সবকিছু নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করে দেব।’ এরপর আদালত তাদের দুই দিন সময় দেন। 

এর আগে গত ৩০ জুন গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় রিটকারীদের আইনজীবীকে ১২ কোটি টাকার বিনিময়ে সমঝোতার আভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘আমরা শুনেছি শ্রমিকদের আইনজীবীকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে তাদের মামলায় আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে।’ ওই দিন হাইকোর্ট আরো বলেন, ‘আদালতকে ব্যবহার করে অনিয়ম যেন না হয়। যদি সবকিছু আইন অনুযায়ী না হয়, তবে বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। কোর্ট ও আইনজীবীর সততা নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন জনমনে না ওঠে।’ ওই সময় হাইকোর্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ কেন উপমহাদেশের এমন কোনো আইনজীবী এখনো জন্ম নেননি যার ফি ১২ কোটি টাকা হতে পারে।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন আইনজীব ইউসুফ আলী। আবেদনে গ্রামীণ টেলিকমের কাছে শ্রমিকদের পাওনা আড়াইশ কোটি টাকার বেশি বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। পরে আবেদনকারিদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা হয়েছে উল্লেখ করে মামলাটি তুলে নেন বাদী পক্ষ।