শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
● পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল উদ্বোধন      ● সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে      ● বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে হাতিরঝিল থেকে পানি নিচ্ছে হেলিকপ্টার      ● বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের খোঁজখবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী      ● বঙ্গবাজারে ফায়ার সার্ভিসের ৫০ ইউনিট, ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন      ● ৫ ঘণ্টায়ও নেভেনি বঙ্গবাজারের আগুন      ● ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে হামলা, টিয়ারশেল নিক্ষেপ      ● আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সাথে নৌ-সেনা ও বিমানবাহিনী      ● বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড: আশপাশের ৪ ভবনে ছড়িয়েছে আগুন      ● জ্বলছে বঙ্গবাজার : প্রতিনিয়ত বাড়ছে আগুনের তীব্রতা     
পর্যটনের অন্যতম সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হাওর
ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২২ , সোমবার ১২ : ০৫ পিএম   প্রদর্শিত হয়েছে ৪৯৮ বার

পর্যটনের অন্যতম সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হাওর

বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এমন বৈচিত্র্যময় ঋতুর সমাবেশ সম্ভবত আর নেই। এজন্যই কবি বলেছেন, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি। পাহাড়, নদী, বন, জঙ্গল, ঝরনাধারা, ফল, ফসল এবং পাখিদের কলকাকলিতে চির রূপ মাধুর্যে 'দুগ্ধ স্রোতরূপী' বাংলাদেশ। নদীমাতৃক এদেশে বিভিন্ন প্রকার জলাধারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যাদের মধ্যে অন্যতম হলো হাওর। এর প্রতি পরতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পাহাড়, নদী ও হাওরের নির্মল উজ্জ্বলতা। হাওরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জলরাশি এক অপরূপ মহিমায় পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।


দ্বীপের মতো করে গড়ে ওঠা ঘরবাড়িগুলো বর্ষাকালে যেমন চোখজুড়ানো দৃশ্যপট তৈরি করে, তেমনি শীতের কুয়াশায় আচ্ছন্ন হাওরাঞ্চলে পাখ-পাখালিদের কলতান কিংবা শুস্ক মৌসুমের পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদের ছড়াছড়ি হাওরকে মন জুড়ানো রূপ দেয়। গত কয়েক বছরে হাওর পর্যটনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এর মাধ্যমে হাওর এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো। ফলে আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে এবং হচ্ছে হাওর এলাকায়। তাছাড়া হাওর এলাকায় বর্তমানে যেসব অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে, তা পর্যটন বিকাশে সহায়ক। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুসারে দেশে মোট ৪১৪টি হাওর রয়েছে। তবে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবানুসারে হাওরের সংখ্যা ৪২৩টি।


বাংলাদেশের হাওরগুলোর মধ্যে অন্যতম ইটনার হাওর, ছাইয়ার হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, ডাকের হাওর, তল্লার হাওর, নলুয়ার হাওর, পচাশোল হাওর, বাড়ির হাওর, মইয়ার হাওর, মাকার হাওর, মাহমুদপুর হাওর, রায়ের গাঁও হাওর, শনির হাওর, সুরমা বাউলার হাওর, সোমাই হাওর, হাইল হাওর, হাকালুকি হাওর ও হুমাইপুর হাওর। এগুলোর মধ্যে কিছু হাওরের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।


নিকলী হাওর:

বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি হাওর। এর নাম এসেছে নিকলী উপজেলা থেকে, যেখান থেকে হাওরটির উৎপত্তি হয়েছে। নিকলী ছাড়াও এই হাওরের পরিধি পার্শ্ববর্তী মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১১০ কি.মি. দূরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ মিঠাপানির জলাভূমি ও জনপ্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। ঢাকার সাথে সহজ সড়ক ও রেল যোগাযোগ এই হাওরের পর্যটন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। নিকলীতে একাধিক আবাসিক হোটেল গড়ে উঠায় পর্যটকরা এখন একাধিক দিন হাওর ভ্রমণের সুবিধা পাচ্ছে। বর্ষায় এই হাওর যখন পানি দ্বারা পূর্ণ হয় তখন ব্যাপক হারে পর্যটক বৃদ্ধি পায়।


টাঙ্গুয়ার হাওর:

বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি হাওর। প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এ হাওর বাংলাদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার স্থান, প্রথমটি সুন্দরবন।


হাকালুকি হাওর:

এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর। এটি মৌলভীবাজার জেলার় বড়লেখা (৪০%), কুলাউড়া (৩০%), এবং সিলেট জেলার় ফেঞ্চুগঞ্জ (১৫%), গোলাপগঞ্জ (১০%) এবং বিয়ানীবাজার (৫%) জুড়ে বিস্তৃত। ভূতাত্ত্বিকভাবে এর অবস্থান, উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড় এবং পূর্বে ত্রিপুরা পাহাড়ের পাদদেশে। ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে উজানে প্রচুর পাহাড় থাকায় হাকালুকি হাওরে প্রায় প্রতি বছরই আকষ্মিক বন্যা হয়। এই হাওরে ৮০-৯০টি ছোট, বড় ও মাঝারি বিল রয়েছে। শীতকালে এসব বিলকে ঘিরে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণে মুখর হয়ে উঠে গোটা এলাকা।


মইয়ার হাওর:

বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর শহর থেকে আধা কিলোমিটার দূরে মইয়ার হাওরের অবস্থান। আগে এখানে বোরো আবাদ হতো এখানে। ১৯৯৯ সালে হাওরের ভেতর দিয়ে সড়ক নির্মাণ হলে এর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হাওরটি ধীরে ধীরে মরতে বসেছে। বর্তমানে জগন্নাথপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে হাওরের জমি আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। ঠিকমতো চাষাবাদ না হওয়ায় অনেকেই জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। বেশির ভাগ ক্রেতা সেসব জমিতে ঘর তুলেছেন।


হাইল হাওর:

হাইল হাওর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার সদর ও শ্রীমঙ্গল এবং হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত। এতে রয়েছে ১৪ টি বিল এবং পানি নিস্কাশনের ১৩ টি নালা। এই হাওরটির মোট আয়তন ১০ হাজার হেক্টর; যার ৪ হাজার হেক্টর প্লাবন ভূমি, ৪ হাজার ৫১৭ হেক্টর হাওর, ১ হাজার ৪০০ হেক্টর বিল, ৪০ হেক্টর খাল এবং ৫০ হেক্টর নদী।


অসীম সম্ভাবনা বুকে ধারণ করে জেগে আছে হাওরগুলো। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান হাওরের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যদি হাওরের এ অপার সম্ভাবনা ও সুযোগকে কাজে লাগানো সম্ভব হয়, তাহলে একদিকে যেমন হাওরবাসী উপকৃত হবে, তেমনি দেশ অর্থনীতিতে আরও সমৃদ্ধিশালী ও অগ্রসরমান হবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »





  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর

প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক

জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত

ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com

© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com