সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে করা যেকোনো ফৌজদারি মামলায় চার্জশিট দাখিল ও গ্রেফতারের জন্য অনুমতির বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি ট্রিবিউন নিউজ বিডিকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। তিন বছর আগে কার্যকর হওয়া সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারার বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের উপর শুনানি শেষ হয় গতকাল বুধবার। 

বৃহস্পতিবার রায়ে আদালত বলেছেন, ‌‘সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি। এধরণের পূর্বানুমতির বিধান দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। অবশ্যই আইন সবার জন্য সমান হতে হবে।’ আদালত প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান কি বৈষম্যমূলক নয়? সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে কী হয়? অভিযোগ পেলেই তো তাদের গ্রেফতার করা হয়।’ 

আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় উপস্থিত ছিলেন। 

এই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। 

২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর গেজেট জারি হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়। আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।’ 

বিভিন্ন মহলে সমালোচনার মধ্যে আইনের এ ধরা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।