অস্ত্র আইনের মামলা
জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ:
২৫
সেপ্টেম্বর
২০২২ ,
রবিবার
০১ : ০৯ পিএম প্রদর্শিত হয়েছে ৮০১১ বার
|
অস্ত্র আইনের মামলায় কথিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-৩য় আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জি কে শামীম এবং ছয়জন দেহরক্ষীকে বৈধ লাইসেন্সকৃত অস্ত্র দিয়ে শর্ত ভংগ কনে ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ এবং অপর আসামি আমিনুল ইসামকে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি রাখার অপরাধে দোষী সাবস্ত করা হয়। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- মামলার অপর আসামিরা হলেন- মো. জাহিদুল ইসালাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন হাওলাদার রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন। তিনি অনতিবিলম্বে রায় কার্যকরের দাবী জানান। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী শাহীনুর রহমান রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল দায়েরের কথা জানান। এদিন রায় ঘোষণা থাকায় জি কে শামীমসহ অপর আসামিদের সকাল ৯.৩৫ মিনিটে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের মহানগর দায়রা জজের হাজত খানায় রাখা হয়। এরপর রায় ঘোষণার আগে দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এদিন রায় উপলক্ষ্যে আদালতে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। গত ২৮ আগস্ট এ মামলায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন আদালত। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছে- মর্মে ডকুমেন্ট দেখালেও তা যাচাইয়ে তার সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এস এম বিল্ডার্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আসামি জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিল। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় ক্রয় করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন। এছাড়া আসামিদের মধ্যে এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজ অবৈধ মাদক এবং জুয়ার ব্যবসায়ী (ক্যাসিনো) হিসেবে পরিচিত। এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামিগণ এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম এর দুষ্কর্মের সহযোগী উচ্চ বেতনভোগী দেহরক্ষী। আসামি এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম অপর আসামিগনের সহায়তায় তাদের নিজ নামিও লাইসেন্সকৃত অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাটবাজার চাঁদাবাজি করে স্বনাম-বেনামে বিপুল পরিমাণে অবৈধ অর্থ অর্থ বৈভবের মালিক হয়। আসামিগণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অজুহাতে লাইসেন্স প্রাপ্ত হলেও মূলত তারা প্রদত্ত অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্র-শস্ত্র বহন এবং প্রদর্শন করে জনমনে ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাট বাজার চাঁদাবাজি করেছে, যা ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ এর (ঙ)/ ২১/ ২৩ ধারা অপরাধের পর্যায় ভুক্ত। এ অভিযোগের ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর গুলশানের নিকেতনে যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। অভিযানে ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজ ও নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা জব্দ করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এছাড়া তার জিম্মা থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৭ রাউন্ড গুলি, ৩টি গুলির খোসা ও ২টি খালি ম্যাগজিন। দেহরক্ষীদের ৭টি শটগান, ৭৩ টি কার্তুজ এবং কয়েক বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচার আইনে তিনটি মামলা হয়। একই বছরের ২৭ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১-এর এসআই শেখর চন্দ্র মল্লিক আসামিদের বিরুদ্ধে আদলতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর
প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক
জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত
ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com