বজ্রপাতে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল মহামূল্যবান, সত্যিই কি তাই?
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ:
১৯
অক্টোবর
২০২২ ,
বুধবার
১১ : ১০ এএম প্রদর্শিত হয়েছে ৮১৯৩ বার
|
বৃষ্টির সময় আকাশ ফুঁড়ে ভূমিতে নেমে আসা আলোর ঝলকানি অর্থাৎ বজ্রপাত বা বিজলি দেখতে সুন্দর হলেও এই আলোর বিনাশ ক্ষমতা অনেক বেশি। কেননা, বজ্রপাতের তাপমাত্রা ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। আর তাই বজ্রপাতকে বলা হয়, প্রকৃতির ভয়ংকর সুন্দর দৃশ্য। ধারণা করা হয়, বজ্রপাতে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল মহামূল্যবান। সত্যিই কি তাই? আবহাওয়াবিদদের পর্যবেক্ষণে, বাংলাদেশের উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল বজ্রপাতপ্রবণ এলাকাগুলোর অন্যতম। সাধারণত যেসব এলাকায় গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, সেসব এলাকায় সৃষ্ট মেঘ থেকে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অর্থাৎ, তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি বাড়লে বজ্রপাতের আশঙ্কা ১০ গুণ বেড়ে যায়। মূলত বঙ্গোপসাগর থেকে আসা গরম বাতাস এবং উত্তরের পাহাড়ি এলাকার ঠান্ডা বাতাসের সংমিশ্রণে তৈরি হয় বজ্রপাত উপযোগী পরিবেশ। এ ছাড়া বিগত বেশ কয়েক বছরে দেশে বড় আর উঁচু গাছপালা বেশি নিধন হচ্ছে, যার দরুন বজ্রপাতে মৃত্যুর হারও দিনে দিনে বাড়ছে। এ ছাড়া দুটি কারণে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু ঘটে। একটি প্রত্যক্ষ অন্যটি পরোক্ষ। বিশ্বজরিপে এখন পর্যন্ত বজ্রপাতে যত মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতের পরোক্ষ আঘাতের কারণে। এই যেমন, যেখানে বজ্রপাত আঘাত হানছে সেখানকার পুরো জায়গা বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। যাকে বলা হয় ভূমির বিদ্যুতায়ন। আর এ কারণেই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। অনেকেরই ধারণা, বজ্রপাতে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল চুম্বক হয়ে যায়। আর এই মৃত শরীর দিয়ে তৈরি করা যায় মহামূল্যবান জিনিস । এ ছাড়া আরও মনে করা হয়, লোহার ভেতর ইলেকট্রিসিটি প্রবাহিত হলে তা যেভাবে চুম্বকে পরিণত হয়, বজ্রপাতের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই ঘটে। এদিকে এমন মরদেহের হাড় প্রেত সাধনার কাজে কার্যকরী এবং তা দিয়ে অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব বলেও প্রচলিত রয়েছে। আর এ কারণে এমন লাশ প্রায়ই কবর থেকে চুরি হয়ে যায়। কিন্তু এগুলো অন্ধবিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নয়। ইলেকট্রিক শকে মারা গেলে মরদেহ যেমন হয়, বজ্রপাতের ক্ষেত্রেও ঠিক একই রকম থাকে, মূলত এর মধ্যে কোনো পার্থক্যই থাকে না। ট্যাক্সিস অর্থ প্রাণীর দিকমুখিতা। সহজভাবে বললে, বিভিন্ন পরিবেশে যেমন: তাপ, চাপ, আলো, শব্দের দিকে প্রাণীর ছুটে চলা। কোনো প্রাণী স্রোতের দিকে চললে তাকে বলা হয় রিওট্যাক্সিস। বৃষ্টি হলে পুকুর বা নদীতে পানি বেড়ে যায়। তখন স্রোতের দিকে কই মাছ চলতে শুরু করে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে পুকুর বা জলাশয়ের পানিতে অক্সিজেন এবং খাবারের ঘাটতি তৈরি হয়। কই মাছ বৃষ্টির পানি পাওয়ায় সে অক্সিজেন ও খাবারের জন্য স্রোতের সঙ্গে রিওট্যাক্সিসে সাড়া দেয়। শুধু কই মাছই নয়; শিং, মাগুরও বৃষ্টির সময় পুকুরপাড়ে উঠে আসে। বেশি উচ্চতাসম্পন্ন বৃক্ষ, বিশেষ করে তাল, সুপারি, নারকেলগাছ বজ্র নিরোধক হিসেবে কাজ করে। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত। আর তাই অনেক দেশ বজ্রপাত থেকে প্রাণহানি কমাতে এমন গাছ রোপণের ওপর বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। তবে তালগাছের রয়েছে বিশেষ কিছু গুণাগুণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধ করে। গাছটির বাকলে রয়েছে পুরু কার্বনের স্তর। তা ছাড়া উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকে গাছটির আলাদা গুরুত্ব তো রয়েছেই। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ অঞ্জন কর
প্রকাশকঃ জেরীফ আফতাব কর্তৃক
জেড টাওয়ার (৬ষ্ট তলা), বাড়ী- ০৪, রোড-১৩২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ থেকে প্রকাশিত
ইমেইলঃ tribunenewsbd@gmail.com
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || tribunenewsbd.com