নাশকতার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিন সোমবার (১২ ডিসেম্বর) ওই জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আদালতের পল্টন থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই শাহ আলম, মির্জা ফখরুলের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রত্যোকেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এসআই শাহ আলম জানান, জামিন নামঞ্জুর হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন-  বিএনপি চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সাবেক এমপি মো. ফজলুল হক মিলন, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ। এর আগে গতকাল রোববার (১১ ডিসেম্বর) তাদের আইনজীবী ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিমের আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানির জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করেন। 

মির্জা ফখরুলের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘যেহেতু মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে তাই আমরা এবার মহানগর দায়রা জজ আদালতে শীঘ্রই জামিন আবেদন করবো।’ 

গত শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অপরদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নানামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওইদিনই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার দেখায় ডিবি। গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করে পুলিশ। 

এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকার বিচারক আদালতের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কয়েক'শ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহনীর সদস্যকে কড়া পাহাড়া দিতে দেখা যায়। আদালত চত্বরের সবগুলো প্রবেশ মুখে বসানো হয় চেকপোস্ট। জামিন শুনানির আগে ও পরে বিএনপির নেতাকর্মীদের জামিনের দাবিতে মিছিল ও স্লোগান দেন বিএনপির সমর্থিত আইনজীবীরা।